স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ১৫ বছরের এক কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করার অভিযোগে তার বাবা মো. জালাল ভুইয়াকে (৪০) গ্রেফতার করেছে রাজধানীর খিলগাঁও থানা পুলিশ।বুধবার (১০ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম সোহাগ।
জাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাতে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী তার নিজের বাবার বিরুদ্ধে রাতভর ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছে। মামলা নম্বর ১৬। পরে পুলিশ খিলগাঁওয়ের শেখের জায়গা বাজার সংলগ্ন এলাকার একটি বাসা থেকে বাবা মো. জালাল ভুইয়াকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার তিন মাস আগে ইয়াবা সেবনের অভিযোগে তিন মাস কারাগারে ছিলেন জালাল। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলায়।
সিনিয়র সহকারী কমিশনার বলেন, গত ৭ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। এর আগে রাতের খাবার শেষে চিনির সঙ্গে পাউডারজাতীয় চেতনানাশক মিশিয়ে জালাল ভুইয়া তার স্ত্রীকে খাওয়ান। ওই কিশোরী, তার দুই বছরের ছোট ভাই, মা ও বাবা জালাল ভুইয়া এক ঘরের একই বিছানায় ঘুমাতেন। চেতনানাশক খেয়ে জালালের স্ত্রী আগেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের দুই ছেলে-মেয়েও ঘুমিয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মেয়েকে বিছানা থেকে মেঝেতে নিয়ে ধর্ষণ করে তার বাবা। সে সময় কিশোরী তার মাকে ধাক্কা দিয়ে উঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকায় তাকে উঠাতে পারেনি। পরের দিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার মায়ের জ্ঞান ফেরে বলে জানায় ওই কিশোরী।
পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম সোহাগ ওই কিশোরীর বরাত দিয়ে আরো বলেন, ওই ঘটনার আগেও চার-পাঁচদিন ওই কিশোরীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় জালাল। তখন মেয়ে তার বাবাকে এই বিষয়ে সতর্ক করে। মেয়ে ভেবেছিল, বাবা নিজে তার ভুল বুঝতে পারবে। কিন্তু তিনি আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। পরে রোববার দিবাগত রাতে পরিকল্পিতভাবে তাকে রাতভর ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই কিশোরী।
পরে মা ও অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে খিলগাঁও থানায় মামলা করে ওই কিশোরী। সে সময় কিশোরীর সঙ্গে তার মাও আসেন থানায়। তবে মেয়ের মাকে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়েছে কিনা এবং কিশোরীর অভিযোগ সঠিক কিনা তা নিশ্চিত হতে আমরা তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে সব বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানিয়েছেন জাহিদুল ইসলাম সোহাগ।
এদিকে খিলগাঁও থানা পুলিশ জালাল ভুইয়াকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদে জালাল ভুইয়া মেয়েকে ধর্ষণ করার কথা অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জালাল ভুইয়াকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।